ধর্ষণ সমস্যার সমাধান

যারা ধর্ষণ করে তারা অপরাধী। এই অপরাধের শাস্তি তাকে পেতে হবে। অন্য একটা মানুষের অধিকার হরনের কারনে তার এই শাস্তি!  অন্য একটা নিরিহ মানুষের ইচ্ছা , চাওয়া  , পাওয়াকে পিষে মারার জন্য তার শাস্তি । সমাজের, রাষ্ট্রের  শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য তার  শাস্তি! সুস্থ পারিবারিক বন্ধনের ভিত্তিমূলে আঘাত করার জন্য তাকে শাস্তি পেতেই হবে।  

  
পুরুষবাদি , নারিবাদি, দল, মত , ধর্ম, প্রগতিশীল , মুক্তমনা  কোন মতবাদের আড়ালে যেন ধর্ষক আশ্রয় প্রশ্রয়  না পায়, সেইদিকে সবার নজর দিতে হবে।  
আমাদের দ্বিধাবিভক্তির সুযোগে অপরাধী যেন কোনরূপ  সুযোগ পেয়ে না যায়, সেইদিকে সবার সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।

সবার কাছে আমার প্রশ্ন -  সব বিষয়ে আমাদের দ্বিধাবিভক্ত হওয়ার, সত্যি  কোন  প্রয়োজন আছে কি?   

ধর্ষণ কোন একটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ঘটে না। একটি ধর্ষণ সংঘটিত হওয়ার পেছনে অনেকগুলো অনুঘটক কাজ করে। ধর্ষকের শাস্তি দেয়ার পাশাপাশি , ধর্ষণের সেইসব অনুঘটক গুলোকে মেরামত করাও ধর্ষককে শাস্তি দেয়ার মতই জরুরী। আসুন খুঁজে দেখি কি কি উপায় অবলম্বন করলে , ধর্ষণের লাগামহীন  প্রবণতাকে কমানো সম্ভব হবে।   


১। শিশু এবং বৃদ্ধা ধর্ষকের দ্রুত প্রকাশ্যে শাস্তি প্রদানঃ


ধর্ষকের পরিচয় এবং  প্রমান নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পর, বিদ্যুৎ গতিতে শাস্তি কার্যকর করতে হবে।  ব্রাশ-ফায়ার হলে ভাল , দেহ থেকে মাথা আলাদা করে দিলে আরও ভাল হবে। তবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা হইচই শুরু করবে বিধায় সরকার বিব্রত হতে পারে।  তবে সরকার যদি এসব সংস্থার প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারে , তাহলে দেশে এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করবে, সেইসাথে রাতারাতি শিশু ধর্ষণ শূন্যের কোথায় নেমে জাবে। সরকার যদি এই পথে পা না বাড়ায় তবে  দেশের প্রচলিত আইনেই  ধর্ষকদের  ফাঁসি কার্যকর করা যেতে পারে।  নিশ্চিত করতে হবে সেই শাস্তি   যেন হয় প্রকাশ্যে !   স্টেডিয়ামে  হাজার হাজার দর্শকের সামনে ফাঁসি কার্যকর হলে ;  কারো  মনে  ধর্ষণের  পরিকল্পনা থাকলে ফাঁসির ভয়েই সব হাওয়া হয়ে উবে জাবে।

 ২। ছেলে মেয়েদের দ্রুত  বিয়ের ব্যবস্থা করাঃ

সম্ভবত  বৈষয়িক উষ্ণতা , মিডিয়া, ইন্টারনেটের কল্যাণে  আমাদের দেশের মানুষ  দ্রুত বয়ঃপ্রাপ্ত হয়ে যাচ্ছে। তারা তথ্যে, কৌশলে,  বুদ্ধিতে, যৌবন লাভে  দ্রুত পরিপক্ক হয়ে যাচ্ছে।  এমতাবস্থায় নিজের এবং অন্যের সার্বিক  নিরাপত্তার জন্য দ্রুত বিয়ে করা জরুরী হয়ে পড়েছে। ছবি দেখুন ।


এখন একটি ছেলে যদি মাত্রাতিরিক্তি আবেগের বশে  ধর্ষণ করে ফেলে তাহলে তার শাস্তি কমপক্ষে যাবজ্জীবন জেল এবং একটি মেয়ের সারাজীবনের দুঃস্বপ্ন , দুঃসহ স্মৃতি!  একটা ভুলের জন্য সারাজীবন ধরে শাস্তিভোগ। ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের জীবনের  সময়, মেধা , সম্পদের নিদারুন অপচয়। বৈধভাবে বিয়ে হতে পারে যার অন্যতম সমাধান। হাতের নাগালে সমাধান থাকতে কেন আমরা বিয়েকে সমাধান হিসেবে বিবেচনা করবো না?  

দ্রুত বিয়ে দিয়ে  খুব সহজে  ধর্ষণ সমস্যাটিকে কমিয়ে ফেলা যায়। বাল্য বিবাহ হলে মা ও শিশুর মৃত্যু ঝুঁকি বেড়ে যায়। এই  ওজুহাত দিয়ে বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ আইন  করা হয়েছে । অথচ এই সমস্যা  খুব সহজেই দূর করা যায়।  বাল্য  বিয়ে প্রতিরোধ না করে , ১৮ বছরের আগে,  বাচ্চা প্রতিরোধ করতে উৎসাহিত  করলেই এই সমস্যা সমাধান করা যায় বাল্য বিবাহ প্রথা চালু করলে ধর্ষণ  সমস্যা অর্ধেকে নেমে আসবে। এছাড়াও আরও লাভবান হওয়া যাবে ,  ছেলে মেয়েরা নিজেদের চরিত্র সংরক্ষন করতে পারে, পড়ালেখায় মনোযোগী হবে, প্রেমের নামে সময়, শক্তি এবং টাকার অপচয় কমবে।  একটি সম্ভাব্য  মৃত্যু রোধ করতে ,  হাজার মানুষকে ধর্ষণের ঝুঁকির  দিকে ঠেলে দেয়া কতটুকু যুক্তিযুক্ত? 

৩। শালীন পোশাকঃ

সাধারন আলোচনা এবং  ধর্ষণের শুনানিতে  যেহেতু ছেলেরা বহুক্ষেত্রে  পোশাকের বিষয়টি নিয়ে আসে, সেহেতু এই বিষয়টিকে সকলের আমলে নেয়া উচিৎ ।যেহেতু ধর্ষণের প্রবনতা এবং সমস্যা ছেলেদের।   তাই  ধর্ষণের ইচ্ছা তাদের মনে কেন  জাগল?  এই প্রশ্নের উত্তরটা কেবলমাত্র ছেলেরাই দিতে পারবে!  মেয়েদের পক্ষে ধর্ষণের কারন পুরোপুরি উপলব্ধি করা কোন ভাবেই  সম্ভব নয়। চেষ্টা যে হয় না তা নয়, তবে দেহগত ভাবে এবং হরমনালি এটা সম্ভব হয়ে উঠে না।





যেহেতু ছেলে এবং মেয়ের উভয়ের সমন্বয়ে সমাজ গঠিত। সমাজে যখন কোন সমস্যা তৈরি হয় তখন ছেলে মেয়ে উভয়ে ভোগান্তি হয়। সুতরাং সমাজের যে কোন সমস্যায়  ছেলে মেয়ে উভয়কেই এর দায়-দায়িত্ব নিতে হবে। নিজ নিজ  অবস্থান থেকে ধর্ষণের সমাধানের  জন্য কাজ করতে হবে। যেসব কাজে ধর্ষণের সমস্যাকে বাড়িয়ে দেয়ার সম্ভাবনা থাকে ,  সেইসব কাজ এড়িয়ে চলতে হবে। নিঃসন্দেহে মেয়েদের  ছোট পোশাক পুরুষের যৌন তাড়নাকে বাড়িয়ে দেয় বা শালীন পোশাক পুরুষের যৌন তাড়নাকে কমিয়ে দেয়। নারী এবং পুরুষ , ছেলে এবং মেয়ে   প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল হতে হবে। প্রত্যেকে বুঝতে হবে আমি সমস্যার পালে নাকি সমাধানের পালে হাওয়া লাগাচ্ছি।
পোশাক নিয়ে একে অন্যকে দোষারোপ করলে ;  যারা প্রকৃত অপরাধী তারা আরও বেশি অপকর্ম করার  সুযোগ  পাবে।

৪। মাদকের প্রসার রোধঃ 

ইদানীং কিছু কিছু মাদক সরাসরি মানুষের যৌন উত্তেজনাকে বাড়িয়ে তুলছে- ইয়াবা যার মধ্যে অন্যতম।  আর বর্তমানে সকল নেশাখোরদের মধ্যে ৫৩% গ্রহন করছে ইয়াবা। একটু লক্ষ্য করলেই বুঝতে পারবেন এসব
মাদক যত বেশি সহজ লভ্য হয়েছে, ধর্ষণের প্রবনতাও ততটাই বেড়েছে। মাদক গ্রহনের ফলে মানুষের কার্যকারণ –ফলাফল সম্পর্কে ধারনা কমে যায়। নেশাগ্রস্থ ব্যাক্তির হিতাহিত জ্ঞান লোপ পায়। মাদকের যোগান নিশ্চিত করার জন্য  তাঁর মাঝে অযথা ঝুঁকি নেয়ার প্রবনতা তৈরি হয়। চুরি , ছিনতাই করার মত ছোট খাট ঝুঁকি নিতে নিতে ধর্ষণ, হত্যার মত বড় বড় অপরাধগুলো সে অনায়াসে করে ফেলে।  দেশে যত মাদকের সরবরাহ যত বৃদ্ধি পাবে ততবেসি অপরাধের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে। তাই ধর্ষণের মত সকল প্রকার অপরাধের হার কমাতে হলে মাদকের উৎস এবং সরবরাহের সকল পথ বন্ধ করতে হবে।

মাদক এবং নেশা দ্রব্য সম্পর্কে আরও জানুনঃ

মাদক, ড্রাগ, নেশা- সর্বনাশা


নেশার ফাঁদ থেকে মুক্তির আধ্যাত্মিক চিকিৎসা


৫।মেয়েদের প্রেমের ঝুঁকিপূর্ণ পথ এড়িয়ে চলাঃ  

দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করার পরিকল্পনা এবং  সুযোগ গুলো পায় অরক্ষিত প্রেম করার কারনে। আবার মেয়েদের দ্বিচারিণী মনোভাবের কারনে ছেলেদের মাঝে ঐ মেয়েটিকে ঘিরে হিংসা বিদ্বেষ এমনকি খুনোখুনি পর্যন্ত হয়ে যাচ্ছে। পরকিয়া প্রেম থেকে শুরু করে যাবতীয়  প্রেম যেমন ধর্ষণ প্রবনতা বাড়িয়ে দিচ্ছে,  তেমনি প্রেম করার  পর হত্যার প্রবনতাকেও বাড়িয়ে দিচ্ছে । মিডিয়াই এইরকম শিরোনাম অহরহ দেখা যাচ্ছে। 




চিত্রঃ পত্রিকায় প্রকাশিত প্রেমের পরিনতি


চিত্রঃ বিভিন্ন মিডিয়াই প্রকাশিত ত্রিভুজ প্রেমের পরিনতি। 

৬। দ্রুত শাস্তির ব্যবস্থা করাঃ

 মানুষ মূলত  একটি প্রাণী বা জানোয়ার । এই জানোয়ারের প্রধান প্রবনতা হচ্ছে পুরস্কারের আশায় কোন কাজ করা অথবা  শাস্তির ভয়ে  কোন কাজ থেকে বিরত থাকা।  ধর্ষণের বিকৃত সুখ সে দ্রুত পাচ্ছে, কিন্তু শাস্তি পেতে দেরি হচ্ছে । তাই তাঁর ধর্ষণপ্রবনতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সাধারন মানুষের মাঝে ধর্ষণ প্রবনতা বাড়ার অন্যতম প্রধান কারন ,ধর্ষণের শাস্তি দিতে বিলম্ব করা।
 অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ধর্ষণের শাস্তি নিশ্চিত করা গেলে , এই প্রবনতা অনেক কমে আসবে।


৭। ধর্ষণ রোধে মিডিয়ার ভূমিকাঃ

২০১৯ সালের ১৪ই  ফেব্রুয়ারীতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব ছেলেরা প্রেম করতে পারেনি অথবা যাদের কোন প্রেমিকা নাই তারা প্রেমিকার জন্য মিছিল বের করেছিল। ক্ষুধার্ত মানুষের ক্ষুধার জ্বালা যেমন তাকে বাধ্য করে আন্দোলন করতে , তেমনি প্রেমের জ্বালা এইসব প্রেমিকদের বাধ্য করেছে প্রেমিকার জন্য মিছিল করতে। অন্যের প্রেম দেখে যখন মনে  প্রেমের জ্বালা তৈরি হয় তখন সেগুলোকে সুস্থ স্বাভাবিক ভাবে বের করা পথ করে না দিলে , বিকৃত ভাবে ধর্ষণ প্রবনতা তৈরি হয়। আমরা আগেই বলেছি , মানুষ মূলত একটি জানোয়ার। তুলনামূলক চিত্র দেখুন -- 
। 

চিত্রঃ প্রেমের জন্য মানুষ এবং জানোয়ারের লড়াই 

বিনোদনের সকল মাধ্যমে নাটক, সিনেমা, বিজ্ঞাপন, সামাজিক মাধ্যম ইত্যাদিতে  প্রেমকে একেবারে স্বাভাবিক ভাবে তুলে ধরা হচ্ছে যার কারনে সাধারন মানুষের মাঝে ধর্ষণ প্রবনতা বাড়ছে ।  ১৮ এবং ২১ বছরের আগে বিয়ে করা যদি অপরাধ হয় তাহলে , প্রেম করা কেন অপরাধ হবে না ? খুন করা যদি অপরাধ হয়,হত্যা করার চেষ্টাও অপরাধ  হবে তাই প্রেমকেও অপরাধ হিসেবে গণ্য এবং প্রচার করতে হবে।

 এছাড়া ধর্ষণের খবর যত দ্রুত বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছায় , ধর্ষণের শাস্তির খবর তত দ্রুত এবং গুরুত্ব সহকারে মানুষের কাছে পৌঁছায় না। ধর্ষণের শাস্তির খবর মানুষের মাথায় থাকলে , সাধারন মানুষ ধর্ষক হয়ে উঠার আগে অনেকবার চিন্তা করবে।

 

৮। পর্ণের  বিলি বণ্টন রোধ করাঃ

এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে  পর্ণের নীল হাতছানিতে ৭৫% স্কুলের ছাত্ররা আসক্ত। যারা বড় হয়ে গেছে তারাও এই নেশার গণ্ডি থেকে বের হয়ে আসতে পারেনি। পর্ণের শুধু ওয়েবসাইট বন্ধ করে আত্মতৃপ্তি লাভের কোন সুযোগ নাই! পাড়ায় – মহল্লায় যেসব দোকানগুলোতে এগুলো বিলিবণ্টন হয় সেইসব জাইগা থেকেও এসব অশ্লীল মুভি, ছবি দূর করতে হবে।


৯। সরকারি চাকরীতে অবসর নেয়ার  বয়স কমিয়ে দেয়াঃ

পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের অভাবে বেকারত্ব প্রকট আকার ধারন করেছে। বেকার যুবকরা কর্ম এবং অর্থের অভাবে বিয়ে করতে পারছে না। বেকার সমস্যা দূর হলে ধর্ষণের সমস্যা এবং অন্যান্য অপরাধ প্রবনতা কিছুটা হলেও কমবে। কারন আমরা জানি অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা।  

দেশের ৯৮% মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করে সরকারি ২% মানুষ , আবার এই ২% মানুষ ৯৮% মানুষের দেয়া সব সুযোগ সুবিধাগুলো ভোগ করে । তাই সব সমস্যা সমাধানে তাদের দায়ভার কমপক্ষে ৯৮% । দ্রুত   নতুনদের জন্য জাইগা ছেড়ে  দিলে  নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। যেসব ছেলেমেয়েরা মৌলিক চাহিদা পূর্ণ করার জন্য  জীবনে সংগ্রাম করে চলছে তাদের সুযোগ দিলে সমাজ থেকে অপরাধ প্রবনতা এমনিতেই অনেক কমে যাবে। মানুষ যখন কাজ করার সুযোগ পাবে, যখন তাদের জীবনে গতি আসবে তখন নিজে নিজেই অনেক কিছু মেরামত করে নিবে।

 বেকারত্ব আমাদের দেশে অপরাধ প্রবনতা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম বড় কারন । ৫৫-৬০ বছর বয়সে সরকারি চাকরিজীবীরা অবসর নিয়ে নিলে তারা পেনশনের টাকায় মোটামুটি সাচ্ছন্দে জীবন কাটিয়ে দিতে পারবে । অন্যদিকে দ্রুত নবীনদের জন্য জাইগা তৈরি হবে , কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। আবার সরকারী চাকুরীজীবীরা  দ্রুত অবসর নিলে তারা উদ্যোগতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার সময়, শক্তি এবং সুযোগ পাবী। এতে করে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। নবীনদের চেয়ে প্রবীণরা উদ্যোগতা হলে তারা আরও বেশি ভাল করবে কারন তাদের ভিত্তি থাকবে অনেক মজবুত ,  অভিজ্ঞ চোখ, পুঁজি , আমৃত্যু পেনশন, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, এবং  ধৈর্যের মত সম্পদ । দ্রুত অবসরের যেতে হবে এমন চিন্তা থাকলে এইসব সরকারী কর্মকর্তা  শক্তি সামর্থ্য থাকতে থাকতেই নতুন ব্যবসা করার কথা চিন্তা করবে  এবং ছোট ছোট বিনিয়োগ করে নিজের অভিজ্ঞতা বাড়িয়ে নিতে পারবে।  

 এসেছে নতুন শিশু, তাকে
ছেড়ে দিতে হবে স্থান;
জীর্ণ পৃথিবীতে ব্যর্থ, মৃত আর
ধ্বংসস্তূপ – পিঠে।
চলে যেতে হবে আমাদের।
চলে যাব-তবু আজ যতক্ষণ দেহে
আছে প্রান
প্রাণপণে পৃথিবীর সবার
 জঞ্জাল
এ বিশ্বকে এ-শিশুর বাসযোগ্য
করে যাব আমি-
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ়
অঙ্গীকার
অবশেষে সব কাজ সেরে  
আমার দেহের রক্তে নতুন
শিশুকে
করে যাব আশীর্বাদ
তারপর হব ইতিহাস
ছাড়পত্র
সুকান্ত ভট্টাচার্য

নতুন শিশুর জন্য , পুরনো শিশুদের জায়গা ছেড়ে দেয়া মহত্ত্বেরও বটে।

 ১০।বেকার ছেলেদের দায়িত্ব, চাকরিজীবী মেয়েদের নিতে হবেঃ

একটি ছেলে চাকরী করলে পরিবারে ৪-৫ জন তার উপর নির্ভর করে বেঁচে থাকতে পারে। তাহলে একটি মেয়ে চাকরী করলে, একজন বেকার স্বামীর দায়িত্ব কেন নিতে পারবে না? মেয়েরা চাকরীর ক্ষেত্রে কোটা সহ বিভিন্ন প্রকার অগ্রাধিকার লাভ করছে, সমাজ থেকে বেকারত্বের বোঝা অপসারনের জন্য তাই তাদেরও অগ্রনি ভূমিকা পালন করতে হবে। শুধু ছেলেদের উপর নির্ভর করে, তাদের উপর সকল দোষ চাপিয়ে দিয়ে , মেয়েরা শুধু সুবিধা ভোগ করলে সমাজের ভারসাম্য নষ্ট হবে। আমাদের সমাজের ঘুনে ধরার লক্ষন, এই ধর্ষণ প্রবনতা বৃদ্ধি মাঝে দিয়ে প্রকাশ পাচ্ছে। তাই সমাজের ভারসাম্য রক্ষার জন্য চাকরিজীবীমেয়েদের বেকার যুবকদের বিয়ে বা পুরোপুরি  দায়িত্ব নিতে হবে। তাহলে   দেশ থেকে বেকারত্ব কমবে তেমনি অপরাধ প্রবনতাও কমে আসবে।  

১১। ধর্ষণ রোধে স্কুল, কলেজের প্রধান শিক্ষক অথবয়া সহকারি শিক্ষকের করনীয় ঃ

 এই রকম কোন লক্ষন যদি দেখা যায় তাহলে অবশ্যই অন্য শিক্ষকরা বিষয়টি নিয়ে কথা বলবেন। মানসিক ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে বলবেন , ছেলেদের সেকশনে ক্লাস নেয়ার জন্য উপদেশ দিবেন। কার্যক্রম সীমিত করে দেবেন, চাকরী ছেড়ে দিতে অথবা  অন্য চাকরী নিতে সাহায্য করবেন। সবাইকে মনে রাখতে হবে একজন শিক্ষকের কেলেংকারি মানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সবার কেলেঙ্কারি। 

১২। ধর্ষণ রোধে মাদ্রাসা শিক্ষকের করনীয়ঃ

একটু লক্ষ্য করলেই বোঝা যাবে , মাদ্রাসায় যারা ধর্ষণ করছে  তাদের বেশির ভাগ হচ্ছে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা অথবা প্রধান শিক্ষক অথবা পাশের মসজিদের ইমাম । অর্থাৎ সেখানের তারাই একমাত্র ক্ষমতাধর ব্যাক্তি । তাদের প্রশ্ন করার মত কিংবা জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার মত কেউ নেই। তাই তারা  স্বৈরশাসকের মত ইচ্ছানুযায়ী তাদের মনের খায়েশ মেটানোর ব্যবস্থা করতে পেরেছে। মাদ্রাসা এবং মসজিদের ব্যবস্থাপনা কমিটিকে পুনরায় ঢেলে সাজাতে হবে । প্রশাসনের প্রত্যেকে নিয়মিত জবাবদিহিতার ব্যবস্থা রাখতে হবে।

আর একটা বিষয় লক্ষণীয় মাদ্রাসা শিক্ষক এবং ইমাম তাদের প্রত্যেকে বলেছে শয়তান তাদের দিয়ে এইসব অপকর্ম করিয়ে নিয়েছে।

ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী প্রতিটি মানুষকে শিকার করতেই হবে শয়তানের বাস্তব অস্তিত্বকে। তাই শয়তানের ধোঁকা থেকে বাচার জন্য , সকল প্রকার সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এইটা একপ্রকার সতর্কবার্তা শিক্ষক , ইমাম এবং সাধারন মানুষদের জন্য।  তাই শয়তান কিভাবে মানুষকে দিয়ে অপকর্ম করিয়ে নেয়, ধোঁকা দেয় এই সম্পর্কে বেশি বেশি প্রচার- প্রচারনা  চালাতে হবে।


১৩। ধর্ষণ রোধে পুলিশ এবং প্রশাসনের করনীয়ঃ 

 দেশের সার্বিক অপরাধ প্রবনতা কমানোর প্রধান দায়িত্বে আপনারা আছেন । তাই আপনাদের দায়দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি। আপনাদের মাঝে কোন ধর্ষক থাকলে তাই তাকে কোন রুপ সহযোগিতা না করে , সবাই মিলে তার সর্বচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করুন। নইলে আল্লাহ্‌ না করুক- আজ না হয় কাল   আপনি কিংবা আপনার পরিবার কোন না কোন ভাবে এই দুঃসহ যন্ত্রণার শিকার হবেন।
 কারন   "what goes around comes around" 

১৪। সময়কে কাজে লাগানোর ব্যবস্থা করা এবং স্বেচ্ছাসেবায় উৎসাহ দেয়াঃ

If you just set people in motion they'll heal themselves.” ― Gabrielle Roth,
বিভিন্ন গবেষণায় প্রমানিত হয়েছে যাদের যৌন প্রবনতা বেশি অর্থাৎ যাদের ভেতর সেক্স বেশি কাজ করে তারা  বেশি মেধাবী মানুষ! এখন স্বাভাবিক ভাবে সেক্সের ইমপালসকে  ডিসচার্জ  করতে না পারলে এটা মানুষকে নানারকম পিড়া দিবে। মনোযোগহীনতা ,  বিষণ্ণতা , উদ্দেশ্যহীনতা , রাগ, বিরক্তি, অহেতুক মারামারি জড়িয়ে পড়া এইরকম আরও বেশি কিছু মানসিক এবং শারীরিক সমস্যা তৈরি করবে। এখন দেশের প্রচলিত আইন, পরিবারের বাঁধা , কিংবা অর্থনৈতিক অভাবের কারনে বিয়ে করে, বৈধ উপায়ে যৌন ক্ষুধা মেটানে না পারলে মানুষ এই শক্তিগুলোকে কি করবে? মানুষ না চাইলেও সেক্সের প্রবনতার কারনে সে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়বে।
কিশোর এবং যুবকদের ভেতরে তৈরি হওয়া এই অদম্য ইচ্ছা এবং শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। প্রতিটি রাজনৈতিক দলে স্বেচ্ছাশ্রম দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।  এসব সেচ্ছাসেবী  মানুষদের সম্মানিত করতে হবে। মানুষ যখন গতিশীল হবে তখন নিজেই নিজেকে সংশোধন করে নিতে পারবে।


Comments

Popular Post

নেশার ফাঁদ থেকে মুক্তির আধ্যাত্মিক চিকিৎসা

আত্মার ভেতর এবং বাইরের রহস্য

মাদক, ড্রাগ, নেশা- সর্বনাশা