যেভাবে সমস্যা সমাধানে বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠবেন


সৃষ্টিকর্তা সমস্যা সৃষ্টি করেছেন আমাদের সম্ভাবনা যাচাই করার জন্য। ছোট সমস্যার সমাধান করতে পারলে,  আমরা বড় ধরনের সমস্যা সমাধান করার যোগ্যতা লাভ করি। যত বড় মানুষ তত বড় সমস্যা সমাধানের সে যোগ্যতা লাভ করে। বড় মাপের মানুষগুলো  সমস্যাকে কোন সময়েই বাঁধা হিসেবে নয় বরং সম্ভাবনা হিসেবে বিবেচনা করে। বড় পুরস্কারের প্রথম দরজা হচ্ছে বড় সমস্যার সমাধান বের করা। মূল্যবান বস্তুর অধিকারী হওয়ার প্রথম ধাপ হচ্ছে সমস্যার কার্যকর সমাধান বা ফর্মুলা খুঁজে বের করা। 

"The more uncomfortable the answer, the more likely it is to be true."
                                                                                          ------ Mark Manson






তবে জ্ঞানের স্বল্পতা  আপনার ভেতরে তৈরি করতে পারে  উদ্বেগ এবং উৎকণ্ঠা! কোথায় প্রয়োজনীয় জ্ঞান খুঁজে পাওয়া যাবে এটা না জানলে,  আপনি  অসহায় এবং বিষণ্ণ অনুভব করবেন।   বর্তমানে আপনার যে জ্ঞান আছে তার উপর সন্দেহ থাকলে বা অবিশ্বাস করলে আপনি উৎসাহহীনতা এবং নির্বিকার  বোধ করবেন। জানলেন, বিশ্বাস করলেন , কিন্তু সেগুলো ব্যবহার করার মত প্রয়োজনীয়  সময় বের করতে  পারলেন না, তাহলে নিজেকে আপনার  বন্দি এবং পরাধীন বলে মনে হবে।
 যে কোন সমস্যা সমাধানের একজন  বিশেষজ্ঞ হতে হলে। আপনার কাছে  সমস্যা সমাধানের  প্রয়োজনীয় জ্ঞান থাকতে হবে। আপনি জানবেন আপনাকে কি করতে হবে।  আপনার জ্ঞানের প্রতি আপনার অগাধ  বিশ্বাস থাকবে। আপনি অন্যের সাথে সমস্যা সমাধানের জন্য পরামর্শ এবং প্রয়োজনীয় সাহায্য নিতে পারবেন। এবং সবশেষে আপনি কাজ শুরু করে দিতে পারবেন তাহলে  আপনি হয়ে উঠবেন অপ্রতিরোধ্য বিশেষজ্ঞ , দিগ্বিজয়ী বীর। 




বিশেষজ্ঞ বিজয়ী বীর হওয়ার চাবিকাঠিঃ  

সমস্যা সমাধানের জন্য কি করতে  হবে তা জানাঃ
 ধরে নেই,  আপনি আপনার অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান চান । বর্তমানে  আপনি চাকরী, ব্যবসা এবং  অনলাইনের  কাজের প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে আপনি আপনার অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান করতে পারেন। এখন এই তিনটি ক্ষেত্রের যে কোন একটিকে  বেছে নিয়ে আপনাকে প্রয়োজনীয় জ্ঞানগুলো অর্জন করতে হবে । এতে আপনার বর্তমানের উদ্বেগ এবং উৎকণ্ঠা কিছুটা দূর হবে।
 বিজয়ী হওয়ার ১ম পদক্ষেপ হচ্ছে-  জানা , আপনি কি চান এবং সেটি অর্জনের জন্য কি কি জ্ঞান আপনার প্রয়োজন।

কোথায় প্রয়োজনীয় জ্ঞান খুঁজে পাওয়া যাবে তা জানাঃ
ধরে নিলাম,  আপনি ব্যবসার মাধ্যমে আপনি আপনার অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন করতে চান কিন্তু আপনি জানেন না,  কি ব্যবসা করবেন এবং  কিভাবে  ব্যবসা শুরু করতে হবে!  তবে আপনি যদি জানেন কিভাবে অন্যের অভিজ্ঞতা থেকে শিখতে হয় এবং কিভাবে  বই  অথবা ইন্টারনেট থেকে ব্যবসা সম্পর্কে তথ্য খুঁজে বের করতে হয় ।  তাহলে ব্যবসা শুরু করার জন্য  প্রয়োজনীয় তথ্য পেয়ে যাবেন এবং নিজের ভেতর উৎসাহ , উদ্দিপনা অনুভব করবেন।  আর জ্ঞানের কোন উৎস যদি খুঁজে না পান তাহলে  অসহায় এবং  বিষণ্ণ  অনুভব করবেন।

 কখন মানুষ বিষণ্ণতায় আক্রান্ত হয়?  কোন একটি কাজ কিভাবে করবেন তা না জানলে অথবা সমস্যাকে  কিভাবে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে হয় তা না জানলে  মানুষ বিষণ্ণ হয়।
বিজয়ী হওয়ার ২য় পদক্ষেপ,   এইটা জানা যে,  কোথায় গেলে আপনার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞানগুলো পাবেন।    

যে জ্ঞান অর্জন করেছেন তার উপর বিশ্বাস রাখাঃ
বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তির যুগে, চারপাশে প্রচুর তথ্য হাতের নাগালে থাকলেও্‌ ,  জ্ঞানের  অভাব প্রচণ্ড। আপনার সমস্যা কি আপনি জেনেছেন, কি করতে হবে জেনেছেন, কি কি জ্ঞান এবং দক্ষতা লাগবে সেসব জেনেছেন, কোথায় গেলে সেই জ্ঞান পাওয়া যাবে তাও জেনেছেন । তবে যেগুলো জেনেছেন সেগুলোর উপর যদি বিশ্বাস না করেন। অর্থাৎ আপনার অর্জন করা জ্ঞানের উপর যদি আপনার সন্দেহ থাকে , আপনার যদি মনে হয় এসব জ্ঞান কোন  কাজ করবে না।তাহলে আপনি নিশ্চল এবং নিঃসঙ্গ অনুভব  করবেন।
 বিজয়ী হওয়ার ৩য় পদক্ষেপ , সব রকম গবেষণার পর আপনি  যা জানেন তার উপর মনে প্রানে বিশ্বাস  করা। 

অভিজ্ঞ মেণ্টরের পরামর্শ নেয়াঃ
 আপনার আইডিয়া, পরিকল্পনা, আপনার জ্ঞান, লক্ষ্য গুলোকে অভিজ্ঞ ( যে ঐ রাস্তায় ইতিমধ্যে হেঁটে এসেছে) কারো সাথে পরামর্শ করে যাচাই-বাছাই করে নেয়া। মেণ্টর আপনার  সমস্যাটিকে সম্পূর্ণ নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে সাহায্য করবে, তার অভিজ্ঞতা আপনাকে দেবে। আপনার সমস্যা থেকে নতুন সম্ভাবনার বীজ খুঁজে বের করতে সাহায্য করবে মেণ্টর- সমস্যার ভেতর থেকে সম্ভাবনা খুঁজে বের করতে  সে হয়তো এমন ধরনের প্রশ্ন করবে
ক) এই সমস্যার ভাল দিকগুলো কি কি?
খ) আপনি এই সমস্যা থেকে কি কি সিখলেন?
গ) আমি এই সমস্যার ভেতর থেকে কি কি গুপ্ত সম্ভাবনাকে খুঁজে বের করতে পারি?
বুঝতেই পারছেন মেণ্টরের  সাথে পরামর্শ করলে সম্ভাবনার কত দিক খুলে যেতে পারে!  বিজয়ী হওয়ার ৪র্থ পদক্ষেপ জ্ঞান অর্জনের পর অভিজ্ঞ কারো সাথে  পরামর্শ করা। 


সময়ের অভাবঃ

আপনি যাবতীয় জ্ঞান দক্ষতা অর্জন করলেন এবং মনে প্রানে সবকিছু বিশ্বাস করলেন, অভিজ্ঞা কারো পরামর্শ নিলেন।  কিন্তু পড়ালেখা, চাকরী, পরিবার কিংবা অন্য কোন ওজুহাতে সময় বের করতে পারলেন না তাহলে আপনি নিজেকে পারিপার্শ্বিকতার জালে বন্দি করে ফেললেন। আপনি যদি অগ্রাধিকার নিরুপন করতে পারেন , আপনি সকল বাস্ততার মাঝে  প্রয়জনিয় সময়ও বের করে নিতে পারবেন ।



বিজয়ী হবার জন্য   আপনার লক্ষ্য হবে প্রথমে আপনার দুর্বলতার জাইগাটাকে খুঁজে বের করা এবং সেটা সমাধানের জন্য কাজ করা। যদি আপনার সমস্যা হয় জ্ঞানের অভাব বই অথবা ইন্টারনেট থেকে উত্তর খুঁজে বের করবেন। যদি আপনার সমস্যা হয় নিজের উপর বিশ্বাস না রাখতে পারা,  তবে কিভাবে নিজের জ্ঞানের উপর বিশ্বাস করবেন, কিভাবে নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়াবেন সেই সম্পর্কে অনুশীলন করা। এবং কিভাবে বিশ্বাস যোগ্য জ্ঞানের উৎস পাবেন সেই সম্পর্কে পড়াশোনা করা। আর যদি আপনার সমস্যা হয় সময়ের অভাব তাহলে সবকিছু থেকে কিছুদিন ছুটি নিন, নিজের অগ্রাধিকারগুলোকে একে একে সাজান । 

Comments

Popular Post

নেশার ফাঁদ থেকে মুক্তির আধ্যাত্মিক চিকিৎসা

আত্মার ভেতর এবং বাইরের রহস্য

মাদক, ড্রাগ, নেশা- সর্বনাশা