কেন ডায়াবেটিকস মহামারীর রুপ নিল
কেন ডায়াবেটিকস হয়?
কেন এখন প্রতিটি বাড়ীতে ডায়াবেটিকস
রোগী দেখতে পাওয়া যায়?
মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া এই রোগটি
মানব সভ্যতাকে কি বার্তা দিতে চাচ্ছে?
একটু পর্যবেক্ষণ করলেই দেখবেন ,
পৃথিবীর ইতিহাসে মানুষ এত আরাম আয়েশ কখনই উপভোগ করেনি।
এখন একটা সুইচ চাপ দিলেই মুহূর্তে হাতের নাগালে সব কিছু
চলে আসে।
ঠাণ্ডা চাইলে ঠাণ্ডা গরম চাইলে গরম,
শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাতাস ইচ্ছেমত পাওয়া যায়।
অন্ধকার ঘর মুহূর্তে ঝলমলে আলোকিত
হয়ে যায়। আগের যুগের ১ বছরের পথ, এখন ১ দিনে অতিক্রম করা যায়।
নিঃসন্দেহে বর্তমানে আমরা সাধারন
মানুষরাও যে ভোগ বিলাস করছি, আগের রাজা বাদশাদের পুনরায় জীবিত করলে তারা হিংসায় জ্বলে পুড়ে আবার মারা যাবে। আগে রাজা
বাদশাদেরও যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা লাগত । এখন সাধারন এক সৈনিকও ঘরে বসে থেকে ড্রনের
সাহায্যে মানুষ মারতে পারে। ফ্রিজ , টেলিভিশন , গাড়ী ইত্যাদি বিলাসি উপকরনগুলোও
সাধারন মানুষ ভোগ করতে পারে যেগুলো রাজা বাদশা চোখেও দেখেনি এমনকি কল্পনাও করেনি!
তাদের জীবিত করা হলে বলতো- তোমরাই তো আসল
রাজা বাদশা! আমরা কি জীবন উপভোগ
করেছি, জীবনের সব রস তো তোমরা উপভোগ করছো!
এবং নিশ্চিত ভাবে জেনে থাক তোমরা এখন স্বর্গে বসবাস করছো।
ডায়াবেটিকস হওয়ার শারীরিক কারনঃ
আমরা এখন আরাম আয়েশ নিশ্চিত করার জন্য অনেক যন্ত্রই আবিস্কার করে ফেলেছি।
ভবিষ্যতে আরও বেশি আরাম কিভাবে নিশ্চিত করা যায় তা নিয়ে বিজ্ঞানের অবিরাম গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছি।
তবে এত আরাম-আয়েশ কিন্তু স্বাভাবিক নয়, প্রাকৃতিক নয়। আমাদের শরীরের প্রতিটি
অঙ্গের নকশা করা হয়েছে পরিশ্রম করার জন্য
। আর যখনই আমরা পরিশ্রম ছেড়ে দিয়ে আরাম আয়েশের দিকে ঝুঁকে পড়ছি তখনই শরীরে এমনসব
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে যা ইতিহাসে কখনও দেখায়নি। ভোগের সাথে বেড়ে চলেছে রোগ । আরাম-আয়েশ ভোগ ডায়াবেটিকস রোগের অন্যতম যোগ।
শুধু ডায়াবেটিকস রোগ কেন বর্তমানে এমন সব রোগের নাম শোনা যাচ্ছে যার অস্তিত্ব
পৃথিবীতে কখনই ছিল না ।
·
সমস্ত পৃথিবীতে আমরা প্রত্যেকে নিজেকে ভালবাসি
। অথচ আমরাই নিজেই নিজের ক্ষতি করে যাচ্ছি। আমার চাওয়া, ইচ্ছাগুলো আমাদের বিরুদ্ধে ক্ষতির
অন্যতম বড় কারন হয়ে দাঁড়াচ্ছে । সুন্দর মোড়কে সাজানো কোমল
পানীয়, ফাস্ট ফুড , ছাড়াও আছে নানারকম নেশা
দ্রব্য, অবৈধ সম্পর্ক , সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বকে
অস্বীকার করা ইত্যাদি । দিন দিন নানান নামে এইসব ক্ষতিকর
বস্তুর এবং সম্পর্কের সহজলভ্যতা অটোইমিউনডিজিজের মত ক্ষতিকর এবং জটিল রোগগুলোকে ডেকে
নিয়ে আসছে।
·
অটোইমিউন
ডিজিজ বলে কিছু রোগ আছে , সেসব রোগ হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শত্রু আর
বন্ধু চিনতে ভুল করে, নিজেই নিজেকে শত্রু হিসেবে বিবেচনা করে নিজের ধ্বংস ডেকে আনে।
প্রায় ৮০ প্রকার অটোইমিউন ডিজিজ খুঁজে পাওয়া গেছে তার মধ্যে টাইপ-১ ডায়াবেটিকস অন্যতম। এ রোগে শরীরের রোগ
প্রতিরোধ ব্যবস্থা প্যানক্রিয়াসে ইনসুলিন উৎপাদন করতে দেয় না। ফলে বাইরে থেকে
ইনজেকশনের মাধ্যমে ইনসুলিন দেয়া লাগে। আর
একবার ইনসুলিনের উপর নির্ভরশীলতা তৈরি হলে , যতদিন রোগী বেঁচে থাকবে ততদিন এইটা
চালিয়ে যেতে হবে। অর্থাৎ তাদের পুরো জীবনটাই ঔষধ ইনজেকশন নির্ভর হয়ে যায়, নিজের
সাথে নিজের যুদ্ধ করতে করতেই সারা জীবন কেটে যায়।
একজন টাইপ-১
ডায়াবেটিকস এ আক্রান্ত মানুষের কাহিনী শুনুন। “ প্রথম যখন আমার ডায়াবেটিকস ধরা পড়ে তখন আমার বয়স ১২ বছর। ডায়াবেটিকস খুব ছোট বেলায়
আমাকে শিখিয়ে দিয়েছে কিভাবে শক্তি সঞ্চয় করে রাখতে হয় এবং কঠিন পরিস্থিতিতে তা খরচ করতে
হয়। আরও শিখিয়ে দিয়েছে কিভাবে বাঁধার সম্মুখে
অটল থাকতে হয়, নিজের পায়ের উপর শক্ত ভাবে দাড়াতে
হয়।“
ডায়াবেটিকস হওয়ার মানসিক কারনঃ
১। প্রতিটি মানুষ শরীর মন আত্মা নিয়ে সমন্বয়ে গঠিত।
সেহেতু স্বাভাবিকভাবেই ধরে নেয়া যায় মানুষের
৩৩% শরীর, ৩৩% মন এবং ৩৪% আত্মা নিয়ে গঠিত
একটা মানুষ ১০০% পূর্ণ হয়। তাই পরিশ্রমের ক্ষেত্রে এইরকম বণ্টন হওয়াই
বাঞ্ছনীয়। অর্থাৎ আমাদের সব কাজগুলো হতে হবে ৩৩% শারীরিক , ৩৩% মানসিক এবং ৩৪%
আধ্যাত্মিক । এইরকমটা যদি না হয় তাহলে শরীর, মন আত্মার সার্বিক ভারসাম্য নষ্ট হবে।
আর ডায়াবেটিকস রোগটি হচ্ছে শরীর, মন , আত্মার ভারসাম্যহীনতার বহিঃপ্রকাশ। বর্তমান
জীবন ব্যবস্থা মনকে কেন্দ্র করে তৈরি। তাই মনের ব্যবহার বেড়ে যাচ্ছে শরীর আর
আত্মার ব্যবহার দিন দিন কমে যাচ্ছে। সবাই আপনার মন বা মনোযোগ আকর্ষণে ব্যাস্ত ।
বাড়ী থেকে বের হলেই বিলবোর্ড , ব্যানার, দোকানদার, অফিসের বস , পিয়ন, ঘরের
টেলিভিশন , সোশ্যাল মিডিয়াসহ প্রায় সবকিছু
আপনার মনোযোগ আকর্ষণ করার ষড়যন্ত্রে
লিপ্ত। মন এবং মনোযোগের মাত্রাতিরিক্ত
ব্যবহারে আমরা আমাদের শরীর, মন , আত্মার ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছি। জীবনের এই
ভারসাম্যহীনতা টেনে নিয়ে আসছে অশান্তি ,
বিষণ্ণতা , ড্রাগ, অবৈধ সম্পর্ক , এছাড়াও নানারকম শারীরিক , মানসিক এবং আত্মিক রোগ। ডায়াবেটিকস তাদের মধ্যে
অন্যতম।
২। আমাদের জীবনের প্রায় প্রতিটি
ক্ষেত্রে নিয়ম শৃঙ্খলার অভাব প্রকট আকার ধারন করেছে। খাবার , ঘুম, শিক্ষা, চিকিৎসা
সবকিছুর ভেতর অপবিজ্ঞান, অবিদ্যা, অপচিকিৎসা , বাহ্যিক চাকচিক্য ঢুকে পড়ছে। যে মানের খাওয়া, ঘুম, শারীরিক পরিশ্রম , আত্মিক
চর্চার প্রয়জন সেই পরিমানের প্রাণশক্তি এবং সময় খুঁজে পাচ্ছি না ।
ফলাফল আমরা ভেতর থেকেই হয়ে পড়ছি বিশৃঙ্খল । ডায়াবেটিকস শারীরিক,
মানসিক এবং আত্মিক বিশৃঙ্খলার বহিঃপ্রকাশ। তাইতো ডাক্তাররা বলে থাকে ডায়াবেটিকস ব্যবস্থাপনা এবং নিয়ন্ত্রণের একমাত্র হাতিয়ার
নিয়মানুবর্তিতা। কারন শৃঙ্খলাতেই পাওয়া যায় সুস্থ জীবন।
ডায়াবেটিকস হওয়ার আধ্যাত্মিক কারনঃ
১। যৌবনে কোন মানুষই ১০০% বিশ্বাস
করে না তার যৌবনের সব মাধুর্য একদিন ফুরিয়ে যাবে; মৃত্যু এসে তার সবকিছু কেড়ে নেবে। তবে এই ডায়াবেটিকস রোগটি মৃত্যুর আগেই মরার স্বাদ
আস্বাদন করিয়ে দেয়। মাথা ঝিমঝিম করা, দুর্বল লাগা, কিংবা হটাৎ করে অজ্ঞান হয়ে
যাওয়া ইত্যাদি লক্ষনগুলো মানুষের পুরো চিন্তা জগতকে পাল্টে দেয়। ডায়াবেটিকের সব
রুগী এক অতিপ্রাকৃতিক শক্তির বহিঃপ্রকাশ
নিজের ভেতরে টের পায়। এক অদৃশ্য শক্তি যার নাম প্রকৃতি , ঈশ্বর , ভগবান
, খোদা , আল্লাহ্ যে নামেই ডাকেন না কেন তার স্পষ্ট অস্তিত্ব জানান দেয় মানুষের ভেতরেই ।
অচিরেই আমরা তাদেরকে আমাদের নিদর্শনাবলী দেখাব,
বিশ্ব জগতের প্রান্তসমূহে এবং তাদের নিজেদের মধ্যে; যাতে তাদের কাছে সুস্পষ্ট হয়ে উঠে যে, অবশ্যই এটা
(কুরআন) সত্য। এটা কি আপনার রবের সম্পর্কে যথেষ্ট নয় যে,
তিনি সব কিছুর উপর সাক্ষী ? সূরা ফুসসিলাত আয়াত
৫৩
ডায়াবেটিকসের মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তা
মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে চাচ্ছে জীবনের
প্রকৃত লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্যকে খুঁজে বের করতে। তার মহিমা প্রচার করতে এবং সব ইচ্ছার ঊর্ধ্বে সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছাকে
প্রাধান্য দিতে!
মানুষের প্রতি ডায়াবেটিকস রোগের বার্তাঃ
১। শৃঙ্খলাবদ্ধ হওঃ
মহাবিশ্বের সবকিছু যেমন নিয়ম এবং
শৃঙ্খলায় মেনে চলছে , মানুষও প্রকৃতির অংশ তাকেও
নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে।
শৃঙ্খলা কিভাবে মানুষকে শক্তিশালী
করে তার বাস্তবা উদাহরন দেখতে হলে পুলিশ বাহিনীর দিকে লক্ষ্য করতে হবে।
আমজনতার মাঝে সাধারন বিশৃঙ্খল , নিয়মনীতিহীন, চরিত্রহীন
মানুষদের মোকাবেলায় পুলিশ বাহিনী হয় শৃঙ্খল , নিয়মানুবর্তী , পরিশ্রমী, চারিত্রিক
দৃঢ়তা সম্পন্ন। পুলিশকে একজন আদর্শ পুলিশ হওয়ার জন্য অনেক নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে চলতে
হয় , কঠোর পরিশ্রম এবং অনুশীলনের মাধ্যমে
নিজেকে তিলে তিলে গড়ে তুলতে হয়। এ কারনে মাত্র পুলিশ ১ একজন হাজার মানুষকে
নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
পুলিশ বাহিনীর চেয়েও যারা আরও কঠোর ভাবে নিয়মনীতি মেনে চলে তারা আরও
বেশি শক্তিশালী হয় যেমন র্যাব । র্যাবের চেয়ে যারা আরও বেশি শৃঙ্খলায় পরায়ন তারা
আরও বেশি শক্তিশালী যেমন সেনাবাহিনী। এ কারনেই বলা হয় “শৃঙ্খলা মুক্তির পথ”। অর্থাৎ যে মানুষ বা যে বাহিনী যত বেশি শৃঙ্খল সে
তত বেশি বিশৃঙ্খল মানুষকে নিয়ন্ত্রণ এবং শিক্ষা
দিতে পারে , নতুন পথের দিশা দিতে পারে।
২। তোমার জন্য বরাদ্দকৃত কষ্ট ভোগের
জন্য তৈরি হওঃ
প্রতিটি মানুষ শরীর মন আত্মার
অধিকারী। এবং প্রতিটি মানুষের জন্যই নিদিষ্ট অনুপাতে সুখ ও দুঃখ বরাদ্দ থাকে।
কিন্তু অনেক মানুষ সম্পদ এবং ক্ষমতার জোরে
শুধু সুখগুলো ভোগ করে দুঃখ কষ্টগুলোকে দূরে ফেলে দিতে চায় । কিন্তু শরীর মন আত্মার
পূর্ণ বিকাশের জন্য কষ্টের ভেতর দিয়ে সবাইকে অতিক্রম করতে হয়। যেমন কষ্টকর
ব্যায়ামের মাধ্যমে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হয় , কঠোর পরিশ্রম করে পড়ালেখা করার
মাধ্যমেই প্রকৃত জ্ঞান অর্জন করতে হয়, ত্যাগের মাধ্যমেই কেবল আত্মাকে পরিশুদ্ধ করতে হয়। এখন যাদের টাকা ও
ক্ষমতা আছে তারা কষ্টের ধাপগুলো অতিক্রম
না করেই অনেককিছু পেয়ে যায়। যেমন নকল করে পাশ করা, টাকা দিয়ে সার্টিফিকেট কিনে
ডাক্তার , ইঞ্জিনিয়ারও হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
বর্তমান পৃথিবীতে টাকা দিয়ে প্রায় সব
কিছুই কিনতে পাওয়া যায়, সব কিছু করাই সম্ভব হয়। কিন্তু আপনার ভাগ্যে বরাদ্দকৃত
পরিশ্রম এবং কষ্টগুলোকে কিভাবে শেষ করবেন? আছে কি কোন উপায়?
ডায়াবেটিকস এর মাধ্যমে বেঁচে থাকতে
থাকতেই আপনি আপনার জন্য বরাদ্দকৃত কষ্ট ভোগ করবেন। গাড়ী থাকা সত্ত্বেও আপনি পায়ে
হাঁটবেন! প্রচুর খাবার থাকলেও অল্প করে খাবেন! অহংকার করার মত প্রচুর অর্জন থাকলেও
স্রষ্টার কাছে যে সেগুলো মূলহীন তা উপলব্ধি করে বিনয়ী হবেন! অর্থাৎ কেবল
ডায়াবেটিকস এর কারনে আপনার জন্য বরাদ্দকৃত কষ্ট ভোগের জন্য তৈরি হবেন। তাই বলা যায়
ডায়াবেটিকস আপনার আধ্যাত্মিক উপকারিতা সাধন করছে। সবদিক থেকে চিন্তা করলে কষ্ট ভোগ
সার্বিকভাবে ক্ষতিকর কিছু নয়।
রাসূল
স.
আরো
বলেছেন,
আল্লাহ
তায়ালা
যাকে
কল্যান
দান
করতে
চান
বা
ভালোবাসেন,
তাকে
কষ্টে
বা
মুসীবতে
ফেলেন। সহিহ
আল
বুখারি:
৫২৩৩
সহীহ মুসলিম প্রখ্যাত সাহাবী সুহাইব ইবন সিনান
রা. থেকে মারফূ‘ সূত্রে বর্ণিত
হয়েছে, ‘ মুমিনের বিষয়টা বড়ই অদ্ভূত! তার
সব অবস্থাতেই কল্যাণ থাকে। এটি শুধু মুমিনেরই বৈশিষ্ট্য যে,
যখন সে আনন্দে থাকে,
তখন আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে এবং যখন সে কষ্টে থাকে, তখন সবর করে। আর এ উভয় অবস্থাই তার জন্য কল্যাণ বয়ে আনে।’
“ধৈর্যশীলদেরকেই তাদের প্রতিদান
পূর্ণরূপে দেয়া হবে কোনো হিসাব ছাড়াই।”
(সূরা যুমার: আয়াত ১০)
৩। নিজের সীমা বুঝ, সীমালঙ্ঘন করো না
ঃ
যখন শরীর সুস্থ ছিল তখন হাজার হাজার বার সীমা
লঙ্ঘন করেছেন শরীর কিছু বলে নাই। কিন্তু ডায়াবেটিকস এ আক্রন্ত হওয়ার পর শরীর খুব
বেশি সীমালঙ্ঘন সহ্য করবে না। যে কোন প্রকার সীমা লঙ্ঘন করলেই শরীর সাথে সাথে
শাস্তি দেবে। তাই ডায়াবেটিকস বলে প্রতিদিন ব্যায়াম করে অথবা হেঁটে
ক্যালোরি পোড়াও। নিদিষ্ট পরিমানের বাইরে হালাল খাবারও নিজের জন্য হারাম করে নাও , নিষিদ্ধ
সব খাবার থেকে নিজেকে বিরত রাখো। নিজে
থেকেই ঔষধ নিয়ম করে ঠিকঠাক গ্রহন করো। মানুষকে সীমা এবং সীমালঙ্ঘনের মর্ম উপলব্ধি করানোর জন্য ডায়াবেটিকস এর বিকল্প
আর কি হতে পারতো?
৪।
ডায়াবেটিকস মনে করিয়ে দিবে
আপনি প্রকৃতির অংশঃ
ডায়াবেটিক এমন এক অসুখ যা আপনাকে প্রাকৃতিক
ছন্দে ছন্দায়িত করে। এইটা প্রকৃতির তরফ থেকে আপনার শরীরে প্রবেশ করানো হয়েছে ,
আপনাকে সচল করার জন্য , অধিক কর্মক্ষম করার জন্য। অলসতার কাছে আত্মসমর্পণকৃত প্রায়
মৃত মানুষগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করার
জন্য।
আপনি যদি স্বইচ্ছায় পরিবর্তন না হন,
তাহলে আপনাকে জোর করে পরিবর্তন করে ডায়াবেটিকস। এ রোগ আপনার অস্তিত্ব রক্ষার
স্বার্থে, আপনাকে পরিশ্রম করতে বাধ্য করে
৫। নিজের সাথে নিজের যুদ্ধ করতে শেখায় ডায়াবেটিকসঃ
একবার ডায়াবেটিকস হলেই আপনি বুঝতে
শিখবেন সুসাস্থের সুখ আর অসুস্থতার দুঃখ। এ রোগ আপনাকে একই দিনে সুস্থতা, অসুস্থতার স্বাদ অনুভব করাবে । এ রোগ আপনাকে সুখ
এবং দুঃখের মেকানিজম শিখিয়ে দেবে। আপনি শিখে যাবেন কিভাবে বেদনা থেকে সুখের দিকে
ফিরে আসতে হয়। আপনি আরও শিখবেন যুদ্ধ করতে
এবং ইমারজেন্সি রেসপন্স করতে কারন যে কোন
সময় পরিস্থিতি এর চেয়েও খারাপ হতে পারে , এমনকি জঘন্ন
হতে পারে। কিন্তু যুদ্ধ করতে হবে , প্রতিদিন যুদ্ধ করতে হবে! মানসিক শক্তির সবটুকু দিয়ে যুদ্ধ করতে হবে। শরীরে প্রতিটি পেশী দিয়ে যুদ্ধ করতে হবে। আর
যুদ্ধ যত কঠিন হবে, বিজয় হবে তত আনন্দের।
Comments
Post a Comment